

বুধবার অন্তর্বর্তীকালীন
সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, অর্থ আত্মসাৎকারীদের স্থানীয় সম্পদ অধিগ্রহণ এবং বিদেশে পাচারকৃত অর্থ ফেরানোর কাজ শুরু করেছে সরকার।
এতে বলা হয়েছে, ব্যাংকগুলোর নতুন ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ বিএফআইইউ, পুলিশের সিআইডি ও দুদকের সহায়তায় আত্মসাৎকারীদের স্থানীয় সম্পদ অধিগ্রহণ এবং বিদেশে পাচার করা অর্থ প্রত্যাবাসনের মাধ্যমে আত্মসাৎ করা অর্থ পুনরুদ্ধারে কাজ শুরু হয়েছে।
সরকার খুব শিগগির একটি ব্যাংকিং কমিশন গঠন করবে, যারা সংশ্লিষ্ট প্রতিটি ব্যাংকে তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত চিত্র প্রকাশ করবে এবং ব্যাংকগুলোর
পুনর্গঠনের জন্য ছয় মাসের মধ্যে একটি বাস্তবায়নযোগ্য রোডম্যাপ প্রণয়ন করবে।
কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ও অন্যান্য প্রভাবশালী ব্যক্তি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ব্যাংকিং খাতে ব্যাপক দুর্নীতি ও প্রতারণার মাধ্যমে নামে-বেনামে বিপুল পরিমাণের অর্থ আত্মসাৎ করেছেন এবং বিদেশে পাচার করেছেন। এর সঠিক পরিমাণ নির্ণয়ের কাজ চলমান আছে। এই আত্মসাৎ করা অর্থের পরিমাণ লক্ষাধিক কোটি টাকার ওপরে বলে ধারণা করা যায়।
অর্থ প্রত্যাবাসনের বিষয়ে বিভিন্ন বিদেশি সংস্থার সহায়তা চেয়ে ইতিমধ্যে যোগাযোগ শুরু করা হয়েছে।
এ ধরনের দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে ইতিমধ্যে সংস্কার কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংকের পর্ষদ পুনর্গঠন করা হয়েছে। অবশিষ্ট ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে
সংস্কার কার্যক্রম শুরু করা হবে।
নতুন ব্যবস্থাপনা
কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আত্মসাৎ করা এসব অর্থের প্রকৃত তথ্য সংগ্রহ করা হবে এবং তাদের মাধ্যমে আত্মসাৎ করা অর্থের প্রকৃত পরিমাণ নির্ণয়ে অডিট কার্যক্রম শুরু করা হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকারের লক্ষ্য হলো সব আন্তর্জাতিক
মানদণ্ড পরিপালনে সক্ষম একটি শক্তিশালী ব্যাংকিং খাত গড়ে তোলা। তবে এই উদ্দেশ্য অর্জনের কার্যক্রম শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক কারিগরি সহায়তা ও অর্থের প্রয়োজন হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকার অর্থ আত্মসাৎকারীদের দেশি-বিদেশি সম্পদ অধিগ্রহণ ও বিদেশ থেকে ফেরত এনে ব্যাংকগুলোকে পুনর্গঠনের লক্ষ্যে কার্যক্রম হাতে নিচ্ছে। ব্যাংকগুলোর এই পুনর্গঠন ও আর্থিক খাতের কাঠামোগত সংস্কার সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। তবে সরকার বাংলাদেশের আর্থিক খাতকে আন্তর্জাতিক
মানের করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
মন্তব্য করুন


প্রায় ১১ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসা সেবা শুরু হয়েছে। চিকিৎসকদের কর্মবিরতির জেরে এ দীর্ঘসময় সেবা বন্ধ ছিলো ।
চিকিৎসকদের নিরাপত্তায় তাই হাসপাতালে সেনাবাহিনী ও বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে জরুরি বিভাগে চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু হয়।
চিকিৎসকদের নিরাপত্তায় হাসপাতালে ২ প্লাটুন বিজিবি ও সেনাবাহিনী মোতায়েন রয়েছে। হাসপাতালে আসা রোগীদের সঙ্গে দুইজন প্রবেশ করতে পারবেন। নিরাপত্তার স্বার্থে হাসপাতালে আসা রোগীর স্বজন ও দর্শনার্থীদের তল্লাশি করে ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে। লাঠি, ধারালো অস্ত্র বা জীবনহানি হয় এমন কোনো জিনিস নিয়ে হাসপাতালে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।
রাতে ঢামেকের জরুরি বিভাগের সামনে গিয়ে দেখা যায়, চিকিৎসকরা হাসপাতালে আসা রোগীদের সেবা দেওয়া শুরু করেছেন। হাসপাতালে আসা রোগীরা টিকিট কেটে জরুরি বিভাগে গিয়ে ডাক্তার দেখাতে পারছেন।
জরুরি বিভাগের এক চিকিৎসক জানান, শর্ত সাপেক্ষে আমাদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাসে সেবা দেওয়া শুরু করেছি। আমাদের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকটি দাবি জানানো হয়েছে এবং মূল দাবি আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে চিকিৎসকদের মারপিট করা দোষী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করতে হবে। আমরা এখন দেখতে পাচ্ছি আমাদের নিরাপত্তায় হাসপাতালে সেনাবাহিনী এবং বিজিবি মোতায়েন রয়েছে। আশা করব, এ ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন আর না ঘটে।
প্রসঙ্গত
যে, গতকাল শনিবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসকদের অবহেলায় বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি
অব বিজনেস টেকনোলজির (বিইউবিটি) শিক্ষার্থী আহসানুল হক দীপ্তর মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে।
পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের তিন চিকিৎসককে মারধরের ঘটনা
ঘটে। এ ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজ দেখে দোষীদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের আল্টিমেটাম দেন চিকিৎসকরা।
এরই জেরে আজ দিনভর জরুরি বিভাগে চিকিৎসা সেবা দেওয়া থেকে বিরত ছিলেন ঢামেকের চিকিৎসকরা।
মন্তব্য করুন


প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ
ইউনূস বলেছেন, ঐক্যবিহীন সংস্কার কিংবা সংস্কারবিহীন নির্বাচন বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে
পারবে না।
আজ শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর
কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে ফোরাম ফর বাংলাদেশ স্টাডিজ আয়োজিত ‘ঐক্য, সংস্কার ও নির্বাচন’
শীর্ষক জাতীয় সংলাপে দেওয়া ভিডিও বার্তায় এ কথা বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ
ইউনূস বলেন, আপনারা এই সংলাপে তিনটি বিষয়কে গুরুত্ব দিয়েছেন; ‘ঐক্য, সংস্কার ও নির্বাচন’।
সংস্কার বিষয়ে আমাদের মধ্যে ঐকমত্য প্রয়োজন। এই তিন লক্ষ্যের কোনোটিকে ছাড়া কোনোটি
সফল হতে পারবে না। ঐক্যবিহীন সংস্কার কিংবা সংস্কারবিহীন নির্বাচন বাংলাদেশকে এগিয়ে
নিতে পারবে না।
সংস্কার ও নির্বাচনের প্রস্তুতি একই
সঙ্গে চলতে থাকবে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, নির্বাচনের
প্রস্তুতির কাজ মূলত নির্বাচন কমিশনের। কিন্তু সংস্কারের কাজে সকল নাগরিককে অংশগ্রহণ
করতে হবে। যারা ভোটার তারা তো অংশগ্রহণ করবেনই, তার সঙ্গে যারা ভবিষ্যতে ভোটার হবেন
তারাও সর্বাত্মকভাবে সংস্কারের কাজে নিজেদেরকে
নিয়োজিত করুন। সংস্কারের কাজটা নাগরিকদের
জন্য সহজ করতে আমরা ১৫টি সংস্কার কমিশন গঠন করে দিয়েছিলাম। তাদের প্রতিবেদন জানুয়ারি
মাসে পেয়ে যাব। প্রত্যেক সংস্কার কমিশনের দায়িত্ব হলো প্রধান বিকল্পগুলো চিহ্নিত
করে তার মধ্য থেকে একটি বিকল্পকে জাতির জন্য সুপারিশ করা। যার যার ক্ষেত্রে সংস্কারের
মাধ্যমে ভবিষ্যৎ কীভাবে রচিত হবে তা বিভিন্ন পক্ষের মতামত নিয়ে সুপারিশমালা তৈরি করে
দেওয়া, নাগরিকদের পক্ষে মতামত স্থির করা সহজ করে দেওয়া। কমিশনের প্রতিবেদনে সুপারিশ
করলেই আমাকে-আপনাকে তা মেনে নিতে হবে এমন কোনো কথা নেই। এজন্য সর্বশেষ পর্যায়ে জাতীয়
ঐকমত্য গঠন কমিশন গঠন করা হয়েছে। যেমন একটা উদাহরণ দেই। কোন বয়সে একজন নাগরিক ভোটার
হতে পারবে তার জন্য নানা দেশে নানা বয়স নির্ধারণ করা আছে। নির্বাচন সংস্কার কমিশন
নিশ্চয়ই এরকম একটা বয়স সুপারিশ করবে। সে বয়স আমার পছন্দ হতেও পারে না-ও হতে পারে।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ধরুন আমি
তরুণদের তাড়াতাড়ি ভোটার করার পক্ষে। যে যত তরুণ, পরিবর্তনের প্রতি তার আগ্রহ তত বেশি-এই
হলো আমার যুক্তি। তরুণরা সংখ্যায়ও বেশি। দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে তারা আগ্রহী। নিজের ভবিষ্যৎ
নিয়ে তার মতামত নেওয়ার জন্য আমি মনে করি ভোটার হওয়ার বয়স ১৭ বছর নির্ধারিত হওয়া উচিত।
নির্বাচন সংস্কার কমিশন কী সুপারিশ করবেন তা আমার জানা নেই। কিন্তু দেশের বেশিরভাগ
মানুষ যদি কমিশনের সুপারিশ করা বয়স পছন্দ করে, ঐকমত্যে পৌঁছার জন্য আমি তা মেনে নেব।
সবকটা কমিশন মিলে আমাদের সামনে বহু সুপারিশ তুলে ধরবে। আমরা এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছি
যে যার যাই মতামত হোক না কেন আমরা দ্রুত একটা ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত করে সংস্কারের কাজগুলো
করে ফেলতে চাই। নির্বাচনের পথে যেন এগিয়ে যেতে পারি সেই ব্যবস্থা করতে চাই।
মন্তব্য করুন


প্রধান
উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ
হাইকমিশনার সারাহ কুক।
আজ
বুধবার (৪ মে) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গিয়ে তিনি সাক্ষাৎ করেছেন। সাক্ষাৎকালে
হাইকমিশনার কুক সম্মানজনক কিং চার্লস হারমনি পুরস্কার প্রাপ্তির জন্য অধ্যাপক ড. ইউনূসকে
অভিনন্দন জানান।
পুরস্কারের
কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এটি একটি মহান সম্মানের বিষয়।
অধ্যাপক
ড. ইউনূস ৯ জুন ঢাকা ত্যাগ করবেন এবং ১৩ জুন ফিরে আসবেন। সফরকালে প্রধান উপদেষ্টা ঊর্ধ্বতন
ব্রিটিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রধান
উপদেষ্টা ও ব্রিটিশ হাইকমিশনারের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট
বিভিন্ন বিষয়, যেমন বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, বিমান চলাচল সংক্রান্ত সহযোগিতা, অভিবাসন এবং
অন্তর্বর্তী সরকারের সম্পদ পুনরুদ্ধার প্রচেষ্টা নিয়ে আলোচনা হয়।
এছাড়াও
অন্তর্বর্তী সরকারের গৃহীত সংস্কারমূলক উদ্যোগ ও বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি
নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
প্রধান
উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস হাইকমিশনারকে জানান, জাতীয় ঐকমত্য গঠনে গঠিত কমিশন এবং
রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় দফার আলোচনা এ সপ্তাহে শুরু হয়েছে এবং শিগগির তা শেষ
হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
অধ্যাপক
ড. ইউনূস বাংলাদেশের সামুদ্রিক গবেষণা কার্যক্রম আরও উন্নত করতে যুক্তরাজ্যের কারিগরি
সহায়তা এবং ব্রিটিশ গবেষকদের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ গ্রহণে আগ্রহ প্রকাশ করেন।
সাক্ষাতে
উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, এসডিজি সমন্বয়কারী লামিয়া
মোরশেদ এবং ব্রিটিশ উপহাইকমিশনার জেমস গোল্ডম্যান।
মন্তব্য করুন


রাষ্ট্র সংস্কার কার্যক্রম এগিয়ে নিতে গঠিত ছয় সংস্কার কমিশনের প্রধানদের সঙ্গে আজ সোমবার ঢাকায় তেজগাঁওস্থ কার্যালয়ে ছয় সংস্কার কমিশন প্রধানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বৈঠকে সংস্কার কমিশনের কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠকে কমিশন প্রধানরা সংস্কার কমিশনের কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন। তারা জানান সংস্কার কমিশনের কাজ পুরোদমে শুরু হয়েছে।
বৈঠকে নির্বাচন সংস্কার কমিশন প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী, পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান সফর রাজ হোসেন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন প্রধান চিারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান, দূর্নীতি দমন সংস্কার কমিশন প্রধান ইফতেখারুজ্জামান এবং সংবিধান সংস্কার কমিশন প্রধান অধ্যাপক আলী রীয়াজ অংশগ্রহণ করেন।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেন শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এরপর গত ১১ সেপ্টেম্বর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে রাষ্ট্র সংস্কারের লক্ষ্যে ছয়টি সংস্কার কমিশন গঠনের ঘোষণা দেন তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস তার ভাষণে বলেন, তারা সংস্কার চান। সংস্কারের মাধ্যমে জাতি হিসেবে নতুনভাবে যাত্রা শুরু করতে চান। আর সংস্কারের প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে প্রাথমিকভাবে ছয়টি কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
পরবর্তীতে ছয় জন বিশিষ্ট নাগরিককে কমিশনের প্রধান করে ছয় কমিশন গঠন করা হয়। গত মাস থেকে কমিশনগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের কার্যক্রম শুরু করে।
মন্তব্য করুন


প্রধানমন্ত্রী ২০২২ সালের
২৫ জুন প্রমত্তা পদ্মা নদীর উপর দেশের বৃহত্তম সেতু ৬.১৫ কিলোমিটার পদ্মা সেতু উদ্বোধন
করেছিলেন। নিজস্ব অর্থায়নে ৩২ হাজার ৬০৫.৫২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে পদ্মা সেতু।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
পদ্মা সেতু নির্মাণে নেওয়া ঋণ পরিশোধের ৭ম ও ৮ম কিস্তি হিসেবে ৩১৪,৬৪,৮৬,৯৬৩ টাকার
বেশি গ্রহণ করেছেন।
বৃহস্পতিবার গণভবনে এক অনুষ্ঠানে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি প্রধানমন্ত্রীর
কাছে পদ্মা সেতুর ঋণের সপ্তম ও অষ্টম কিস্তি হিসেবে ৩১৪ কোটি ৬৪ লাখ ৮৬ হাজার ৯৬৩ টাকার
চেক হস্তান্তর করেন।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এম. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব
মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব এম. নাঈমুল ইসলাম খান, অর্থ বিভাগের
সচিব ড. মো. খায়রুজ্জামান মজুমদারসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা গণভবনে উপস্থিত
ছিলেন।
অর্থ বিভাগ ও বাংলাদেশ সেতু
কর্তৃপক্ষের মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তির আওতায় বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে স্বল্প সুদে ঋণ নেওয়া
হয়।
২০২২ সালের ২৫ জুন সেতু চালু হওয়ার পর থেকে ২০২৪ সালের ২৬ জুন পর্যন্ত পদ্মা সেতু থেকে মোট ১৬৫৩,৭১,৬৫,৫৫০ টাকা টোল আদায় হয়েছে।
৫ এপ্রিল, সেতু বিভাগ প্রথম ও দ্বিতীয় কিস্তি হিসাবে সেতু থেকে টোল আদায় হিসাবে অর্জিত
রাজস্ব থেকে ৩১৬,৯০,৯৭,০৫০ টাকা দিয়ে ঋণ পরিশোধ শুরু করে।
সর্বশেষ কিস্তিসহ সেতু বিভাগ এই পর্যন্ত সরকারকে মোট
১২৬২,৬৬,০৬,৫৪৮ টাকা পরিশোধ করেছে।
মন্তব্য করুন


ইতালি প্রবাসী ফুটবলার ফাহমিদুল ইসলামকে প্রাথমিক ক্যাম্পে ডেকেও দেশে আনা হয়নি। এ নিয়ে দেশের ফুটবলে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে আর সমর্থকদের মধ্যে তৈরি হওয়া এ ক্ষোভ গড়িয়েছে আন্দোলনেও।
এমন পরিস্থিতিতে
রাজধানীর নগর ভবনে আজ দুপুর আড়াইটায় যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ
মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন বাংলাদেশ ফুটবলের নতুন সম্ভাবনা
হামজা চৌধুরী। এসময় তার সঙ্গে উপস্থিত হয়ে চলমান সঙ্কট নিয়ে ক্রীড়া উপদেষ্টার
সঙ্গে আলোচনায় বসেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি তাবিথ আউয়াল।
এসময় ক্রীড়া উপদেষ্টা
সমর্থকদের পক্ষ থেকে আসা অভিযোগ সম্পর্কে বাফুফে সভাপতি বলেন, ‘ফুটবল ফেডারেশনে
সিন্ডিকেট করার কোনো সুযোগ নেই। যোগ্যতা অনুযায়ী সবাই যার যার জায়গা করে নেবে, এমন
কোন কিছুর আভাস মিললে ব্যবস্থা নেবে ফেডারেশন। ফাহমিদুলকে আমরা বাদ দিয়ে দেইনি। তবে
ওকে আমরা আরও সময় দিতে চেয়েছি। আগামী জুনেই ঘরের মাঠে বাংলাদেশের ম্যাচ রয়েছে,
খুব শিগগিরই হয়তো তাকে আমরা মাঠে দেখতে পারি। সমর্থকদের এতটুকু বলবো, হতাশ হওয়ার
কিছু নেই।
আন্দোলনের
সঙ্গে জড়িতরা বলছেন, স্বজনপ্রীতি ও সিন্ডিকেটের কারণেই নেওয়া হয়নি ফাহমিদুলকে।
আলোচনায় সিন্ডিকেট নিয়ে
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আনা অভিযোগ এবং ফাহমিদুলের বাদ পড়া প্রসঙ্গে ক্রীড়া
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘দেশের স্বার্থেই যোগ্য খেলোয়াড়দের বঞ্চিত করার কোনো
সুযোগ নেই। প্লেয়ার সিলেকশনে যেনো স্বজনপ্রীতি বা সিন্ডিকেটের শিকার কেউ না হোন সে
বিষয়ে বাফুফেকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। এ বিষয়ে দুর্নীতির প্রমাণ পেলে জড়িতদের
বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে সরকার। ’
যে কোনো সঙ্কট
মোকাবিলায় বাফুফেকে আরো সুদৃঢ় পদক্ষেপ নিয়ে দেশের ফুটবলকে সামনে এগিয়ে নেওয়ার
আহ্বান জানান আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
আলোচনায় বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনের প্রতি আধুনিক ধারার দৃষ্টিভঙ্গি এবং আমূল পরিবর্তন নিয়ে আসার প্রয়াসকে প্রশংসিত করে ক্রীড়া উপদেষ্টাকে সাধুবাদ জানান হামজা। বাংলাদেশ ফুটবলকে নিয়ে নতুন সম্ভাবনার কথা শুনিয়ে হামজা চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসায় আমি আপ্লুত, দেশের ফুটবলকে সামনে এগিয়ে নেওয়ার জন্য আমার আপ্রাণ চেষ্টা থাকবে।
মন্তব্য করুন


একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস একটি স্মারক ডাকটিকেট, একটি উদ্বোধনী খাম ও একটি সিলমোহর অবমুক্ত করেছেন ।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এই স্মারক ডাকটিকিট অবমুক্তকালে উপস্থিত ছিলেন তথ্য, ডাক ও টেলিযোগাযোগ উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম, ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব ড. মুহাম্মদ মুশফিকুর রহমান এবং ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) এস এম সাহাবুদ্দিন ।
এ ছাড়াও একই সময়ে সপ্তম জাতীয় কমডেকা ২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে একটি স্মারক ডাকটিকেট, একটি উদ্বোধনী খাম ও একটি সিলমোহর ও অবমুক্ত করেন প্রধান উপদেষ্টা।
এছাড়া
এ সময় কমডেকা উপদেষ্টা, সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক
বিভাগের সিনিয়র সচিব মুহাম্মদ এহছানুল হক, কমডেকা চিফ মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধসহ
অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন


আজ শনিবার বিকালে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বিভিন্ন ইসলামি দলের প্রতিনিধির সঙ্গে আলাপের সময় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, জাতীয় নির্বাচন আয়োজনে অযৌক্তিক সময় নষ্ট করবে না অন্তর্বর্তী সরকার।
বৈঠক শেষে দলগুলোর প্রতিনিধিরা সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।
এ ছাড়া সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে আসন্ন দুর্গাপূজায় কেউ যাতে নৈরাজ্য করতে না পারে সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে ইসলামি দলগুলোর প্রতিও আহ্বান জানান প্রধান উপদেষ্টা।
এর আগে, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেন খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামী, খেলাফত আন্দোলন, ইসলামী আন্দোলন এবং নেজামে ইসলাম বাংলাদেশের শীর্ষ নেতারা।
নেতারা জানান, প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে দ্রুত সময়ে নির্বাচনী পরিবেশ তৈরির জন্য প্রধান উপদেষ্টার কাছে দাবি জানানো হয়। তারা আরও জানান, সংলাপে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতায় ভারসাম্য নিশ্চিত করা, দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী না হওয়া, নির্বাচনী ব্যবস্থাসহ সাংবিধানিক বেশ কিছু সংস্কারের দাবিও উপস্থাপন করেছেন নেতারা।
এ সময় প্রধান উপদেষ্টা যৌক্তিক সময়ে সব কিছুর সমাধান করে দেশকে নির্বাচনের দিকে নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের তিন দিন পর গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব বুঝে নেয় মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন উপদেষ্টা পরিষদ। পরে ১২ আগস্ট মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে বিএনপি, ডা. শফিকুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, শাহ আলমের নেতৃত্বে সিপিবি, মাহমুদুর রহমান মান্নার নেতৃত্বে গণতন্ত্র মঞ্চ, আন্দালিব রহমান পার্থের নেতৃত্বে বিজেপি, এএফএম সোলায়মান চৌধুরীর নেতৃত্বে এবি পার্টি, নুরুল হক নূরের নেতৃত্বে গণঅধিকার পরিষদ, হারুন চৌধুরীর নেতৃত্বে গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য, ববি হাজ্জাজের নেতৃত্বে এনডিএম আলাদা আলাদাভাবে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
এরপর ২৯ আগস্ট মির্জা ফখরুলের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে। সাক্ষাৎ শেষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের জানান, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে পর্যায়ক্রমে প্রধান উপদেষ্টা মতবিনিময় করবেন।
মন্তব্য করুন


যৌথবাহিনী দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে গত সাত দিনে ৪২৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ।
বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর) এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ১ মার্চ (শনিবার) পর্যন্ত অভিযানে এসব লোককে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি আরো বলেন, এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৭ ফেব্রুয়ারি হতে ৫ মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৯ পদাতিক ডিভিশন, ১০ পদাতিক ডিভিশন, ১১ পদাতিক ডিভিশন, ৬ স্বতন্ত্র এডিএ ব্রিগেড, ৭ স্বতন্ত্র এডিএ ব্রিগেড, ৮৬ স্বতন্ত্র সিগন্যাল ব্রিগেড ও ৪৬ স্বতন্ত্র পদাতিক ব্রিগেডের অধীনস্থ ইউনিটসমূহ এবং অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সমন্বয়ে রাজধানীর মিরপুর-১, ভাষানটেক, ইসিবি চত্বর, কাঁঠালবাগান, হাজারীবাগ এবং দেশের অন্যান্য এলাকা টঙ্গী, নরসিংদী, রাজেন্দ্রপুর, গাজীপুর, চট্টগ্রাম, কিশোরগঞ্জ, রাজশাহী, ফরিদপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় বেশকিছু যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসব যৌথ অভিযানে তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ, ডাকাত দলের সদস্য ছিনতাইকারী, কিশোর গ্যাং সদস্য এবং মাদক ব্যবসায়ীসহ ৪২৭ জন অপরাধীকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের নিকট হতে অবৈধ অস্ত্র, মাদকদ্রব্য, সন্ত্রাসী কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন প্রকার দেশীয় অস্ত্র, পাসপোর্ট, এনআইডি, মোবাইল ফোন, সিমকার্ড ও নগদ অর্থ উদ্ধার করা হয়।
পাশাপাশি অভিযানে বিভিন্ন স্থানে নকল ভোজ্য তেল ও নকল ফলের জুস এর কারখানা সহ বিভিন্ন অবৈধ স্থাপনা সিলগালা সহ দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। আটককৃতদের প্রয়োজনীয় জিজ্ঞাসাবাদ এবং আইনি কার্যক্রম সম্পন্নের জন্য সংশ্লিষ্ট এলাকার থানা পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।
দেশের সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে। সাধারণ জনগণকে যেকোন সন্দেহজনক কার্যকলাপের বিষয়ে নিকটস্থ সেনা ক্যাম্পে তথ্য প্রদান করার জন্য যৌথ বাহিনীর পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
মন্তব্য করুন


প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিষ্ঠা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে ‘ঐতিহাসিক দায়িত্ব’ পালনে পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
আসন্ন নির্বাচনকে দেশের জন্য ‘শত বছরের ভিত্তি নির্মাণের’ সুযোগ উল্লেখ করে তিনি এ দায়িত্বকে ‘ঐতিহাসিক’ বলে বর্ণনা করেন।
তিনি বলেন, ‘ভূমিকম্প হলে আমরা বিল্ডিং কোড মানা হয়েছে কি না তার কথা বলি। এই নির্বাচন আমাদের সমাজের জন্য সেই বিল্ডিং কোড তৈরি করার সুযোগ। এমন একটি কোড তৈরি করতে হবে, যা যত বড় ঝাঁকুনিই আসুক, নড়বে না।’
পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আপনাদের ওপর যে ঐতিহাসিক দায়িত্ব অর্পিত হয়েছে, তার জন্য আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞ হোন। জীবনের শেষে যখন আমরা ভাবব, কী করেছি—তখন এটিই প্রথমে আসা উচিত যে, আমরা এই বিল্ডিং কোড তৈরিতে অংশ নিতে পেরেছি।’
আজ সকালে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে দেশের ৬৪ জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) এবং পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান উপদেষ্টা এ কথা বলেন।
প্রফেসর ইউনূস বলেন, ‘আসন্ন নির্বাচন শুধু পাঁচ বছরের একটি প্রচলিত নির্বাচন নয়, জাতীয় নির্বাচনের পাশাপাশি এবার একটি গণভোটও অনুষ্ঠিত হবে।’
তিনি বলেন, ‘গণভোট আরও বড় বিষয়—এটা সেই ‘বিল্ডিং কোড’। আমরা যে বিল্ডিং কোড স্থাপন করব, সেটাই আগামী একশ বছর জাতিকে পথ দেখাবে।’
তিনি বলেন, নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এসপিদের পদায়নে দৈবচয়ন পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়েছে। দেশের বৃহত্তর স্বার্থে এটি সহজভাবে নেওয়ারও আহ্বান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব:) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি বক্তব্য রাখেন।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন পুলিশের আইজিপি বাহারুল আলম।
আসন্ন নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ‘একটি নতুন বাংলাদেশ’ জন্ম নেবে উল্লেখ করে প্রফেসর ইউনূস বলেছেন, ‘আমাদের কাজ হবে ধাত্রীদের মতো—একটি নতুন জাতির জন্ম দিতে সহায়তা করা।’
তিনি বলেন, এই নির্বাচন বিশ্বে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে। ‘পর্যবেক্ষকরা বাইরে থেকে এসে আমাদের মধ্যে ত্রুটি খুঁজতে চাইবে... কিন্তু আমরা এমন একটি (স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ, শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর) নির্বাচন উপহার দেব, যা তারা উদাহরণ হিসেবে বহন করে বহু দেশে আলোচনা করবে।’
এই নির্বাচন তাদের জন্য একটি স্মরণীয় পরিদর্শন ও অভিজ্ঞতা হয়ে থাকবে,’ যোগ করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘এটি গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী নির্বাচন। জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানে যারা অংশ নিয়েছিল এবং আমরা যারা সেই আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত—এই নির্বাচন তাদের আদর্শ ও স্বপ্ন পূরণের মাধ্যম।’
‘যে স্বপ্নের জন্য তারা জীবন দিয়েছে, সে স্বপ্ন আমরা এই নির্বাচনের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করব,’ বলেন প্রধান উপদেষ্টা।
ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের আগ পর্যন্ত প্রতিদিন দায়িত্ব পালন করার আহ্বান জানিয়ে প্রফেসর ইউনূস বলেন, ‘একটি সুন্দর, স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতে প্রতিদিন ভাবতে হবে—আজ আমার করণীয় কী—এবং সেটি সম্পন্ন করতে হবে।’
সেবার মান বাড়াতে ও কর্মসম্পাদনে সৃজনশীলতা দেখাতে পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সেরা কর্মসম্পাদনকারী কর্মকর্তাকে বিশেষ পুরস্কার দেওয়া হবে।
২০২৪ সালের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ হওয়া দশম শ্রেণির ছাত্র শাহরিয়ার খান আনাস (১৭)-কে স্মরণ করতে গিয়ে প্রধান উপদেষ্টা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। আনাস মিছিলে যোগ দেওয়ার আগে তার মায়ের কাছে যে চিঠি লিখেছিল, তার একটি অংশ উদ্ধৃত করার সময় প্রফেসর ইউনূসের চোখ বেয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়ে।
তিনি আনাসের চিঠি উদ্ধৃত করে বলেন, ‘আমি স্বার্থপরের মতো বসে থাকতে পারি না। আমি যদি ফিরতে না পারি, তাহলে আমাকে ক্ষমা করে দিও।’
কিছুক্ষণ নীরব থাকার পর তিনি বলেন, ‘তার (আনাসের) কথাই আমাদের দায়িত্ব নির্ধারণ করে। আমরা নিষ্ক্রিয় থাকতে পারি না।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আনাস যেভাবে বলেছিল কাপুরুষের মতো বসে থাকতে চায় না—আমরাও বসে থাকতে চাই না। তার স্বপ্ন আমরা বাস্তবায়ন করতে চাই। সেটিই আমাদের দায়িত্ব।’
তিনি পুলিশ কর্মকর্তাদের আগামী তিন মাস নিরলসভাবে কাজ করে আনাসের স্বপ্ন বাস্তবায়নের আহ্বান জানান।
তিনি কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানান, মিছিলে যোগ দেওয়ার আগে আনাস তার মায়ের কাছে যে চিঠি লিখেছিল, সেটি সঙ্গে রাখার জন্য।
সভায় চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ কমিশনার হাসিব আজিজ, হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার ইয়াসমিন খাতুন এবং জামালপুরের পুলিশ সুপার ড. চৌধুরী মোহাম্মদ জাবের সাদেক বক্তব্য দেন।
এ সময়ে অন্তর্বর্তী সরকারের বিভিন্ন উপদেষ্টাও সভায় উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন