

কুমিল্লা জেলার বিভিন্ন উপজেলায় গত
এপ্রিল মাসের শেষ ১২ দিনে পানিতে ডুবে মৃত্যু হয়েছে ১২ শিশুর।
শুধুমাত্র ৩ দিনেই চার উপজেলায় পানিতে
ডুবে মারা গেছে ৮ শিশু। আর বেশিরভাগই শিশুর মৃত্যুই হয়েছে বাড়ির পাশের পুকুর, ডোবা
বা জলাশয়ে ডুবে।
জানা গেছে, গত ১৮ এপ্রিল জেলার বরুড়া
উপজেলায় দুইজন, ২৫ এপ্রিল চান্দিনায় দুইজন, দাউদকান্দিতে দুইজন, ২৬ এপ্রিল বুড়িচংয়ে
একজন, ২৭ এপ্রিল দেবিদ্বারে তিন জন এবং ৩০ এপ্রিল মুরাদনগরে দুই জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে
পানিতে ডুবে। মারা যাওয়া ১২ শিশুর মধ্যে ১১ জনেরই বয়স ৮ বছরের মধ্যে।
এসব শিশুদের মৃত্যুর ঘটনা সংশ্লিষ্ট
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের (ওসি) সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে এসব শিশুদের
মৃত্যু নিয়ে কেউ থানায় অভিযোগ করেনি বলে জানা গেছে।
মন্তব্য করুন


মজিবুর রহমান পাবেল, নিজস্ব
প্রতিবেদক:
আজ
বৃহস্পতিবার বিকেলে কুমিল্লার পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড এলাকায় এক চাঞ্চল্যকর ঘটনার সাক্ষী
হয় পথচারীরা। চট্টগ্রামমুখী একটি যাত্রীবাহী বাস হঠাৎ করেই রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে
পড়ে—কোনো নির্ধারিত স্টপেজ
কিংবা সংকেত ছাড়াই।
বাসটির
দরজার কাছে দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে দ্রুত বাস থেকে নামতে শুরু করেন। অনেকে
প্রাণ ভয়ে ডিভাইডারের ওপর লাফিয়ে উঠেন। একজন যুবক নিরাপদে পার হলেও তার ঠিক পেছনে থাকা
দুই মাদ্রাসাছাত্র ভারসাম্য হারিয়ে পড়ে যান রাস্তায়।
ঠিক
তখনই সামনে দিয়ে ঝড়ের গতিতে ছুটে আসে একটি মোটরসাইকেল। মুহূর্তের মধ্যে সবাই শ্বাসরুদ্ধ
হয়ে চেয়ে থাকেন সেই ভয়ংকর দৃশ্যের দিকে।
তবে
সৌভাগ্যক্রমে, মারাত্মক দুর্ঘটনা এড়াতে সক্ষম হন মোটরসাইকেল চালক এবং রক্ষা পান ওই
দুই ছাত্রও।
স্থানীয়রা
জানান, সেই মুহূর্তে পুরো এলাকা থমকে গিয়েছিল। আতঙ্ক আর বিস্ময়ে অনেক পথচারীর মুখ ফ্যাকাশে
হয়ে যায়। এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, "মনে হচ্ছিল, সবাই যেন মৃত্যুর খুব কাছ থেকে
ফিরে এল।"
ঘটনাটি
যানবাহনের নিয়ম না মানা এবং শহরের গুরুত্বপূর্ণ রোডে অব্যবস্থাপনার একটি উদাহরণ বলে
মনে করছেন সচেতন নাগরিকরা। এ নিয়ে প্রশাসনের আরও কড়া নজরদারি দাবি করেছেন এলাকাবাসী।
মন্তব্য করুন


নেকবর হোসেন, কুমিল্লা প্রতিনিধি:
কুমিল্লায় দৃষ্টান্ত ফাউন্ডেশন, কুমিল্লা ও ক্যাট’স হোম বিড়ালের বাড়ির আয়োজনে ‘প্রানী নির্যাতন রোধসহ জনসচেতনতা বাড়াতে “প্রানী প্রেমীদের মিলন মেলা, গুনীজন সম্মাননা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান- ২০২৫” অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার নগরীর কবি নজরুল ইনস্টিটিউট কুমিল্লা কেন্দ্রে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, জেলা প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোহাম্মদ সামছুল আলম। দৃষ্টান্ত ফাউন্ডেশন, কুমিল্লা ও ক্যাটস হোম বিড়ালের বাড়ি এর প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন রনীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ সিপন মিয়া, কুমিল্লা প্রেসক্লাবের সভাপতি কাজী এনামুল হক ফারুক, নাঙলকোট উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. ইমরুল হাসান রাসেল, সংরাইশ সরকারি শিশু পরিবারের উপতত্ত্বাবধায়ক শরফুন্নাহার মনি, বার্ড এর উপপরিচালক ডা. বিমল চন্দ্র কর্মকার, কুমিল্লা প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক জাহিদ হাসান, আনন্দধারা বিদ্যাপীঠের প্রধান উপদেষ্টা সিনিয়র শিক্ষক মোঃ কামাল উদ্দিন, ইথিক্যাল ড্রাগস এর ডেপুটি সেলস ম্যানেজার ডা. মোহাম্মদ মাহা্বুবুল হক, দি একমি ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড এর ডেপুটি সেলস ম্যানেজার মুহাম্মদ সামছল হক পাটোয়ারী, রেনেটা পিএলসি কুমিল্লার সহকারী বিক্রয় ব্যবস্থাপক মোঃ আবুল কালাম আজাদ, এসিআই এ্যানিমেল হেলথ, কুমিল্লার সেলস ম্যানেজার প্রদীপ কুমার রায়, নাভানা ফার্মা পিএলসি কুমিল্লা রিজিওন এর আর.এস.এম. মোঃ মইনুল ইসলাম, স্কয়ার ফার্মাসসিউটিক্যালস অ্যাগোভেট বিভাগ, কুমিল্লা অঞ্চলের জোনাল সেলস ম্যানেজার নুর উদ্দিন আহমেদ, অপসোনিন এ্যাগ্রোভেট কুমিল্লার সহকারী বিক্রয় ব্যবস্থাপক ফিরোজ আহমেদ।
অনুষ্ঠানে সমাজ সেবায় অবদান রাখায় চান্দিনা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রবীন শিক্ষক মোঃ মাহফুজ মিয়া (বিএসসি), লক্ষ্মীপুর রামগতি আ স ম আবদুর রব সরকারি কলেজলের অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. আহাম্মদ কাদের জামান, ক্যাটস হোম বিড়ালের বাড়ির উপদেষ্টা মাকসুদ রহমান, ইতালী প্রবাসী মোঃ মোশাররফ হোসেন, মোহাম্মদ আলী সুমন সম্মাননা প্রদান করা হয়। এছাড়াও প্রানি বিষয়ক সংবাদের জন্য এটিএন বাংলার কুমিল্লা প্রতিনিধি খায়রুল আহসান মানিক, দৈনিক আজকের কুমিল্লা পত্রিকার সম্পাদক ইমতিয়াজ আহমেদ জিতু, সাপ্তাহিক বর্তমান প্রতিদিন পত্রিকার সম্পাদক তাওহিদ হোসেন মিঠু, মাছরাঙ্গা টেলিভিশনের কুমিল্লা রিপোর্টার জাহাঙ্গীর আলম ইমরুল, নাগরিক টিভির সাবেক প্রতিনিধি দেলোয়ার হোসাইন আকাইদ ও সাপ্তাহিক অপরাধ অনুসন্ধান পত্রিকার কুমিল্লা ব্যুারো প্রধান মোঃ আরিফুর রহমান মজুমদারকে বিশেষ সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠান প্রায় অর্ধশতাধিক বিড়াল নানা রঙ্গে বর্ণিল সাজে বিড়ালের যেমন খুশি তেমন সাঁজ প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে দেশী ও বিদেশী ক্যাটাগরিতে ৩ করে ৬ বিড়াল বিজয়ী হয়। অনুষ্ঠানের সভাপতি সাইফ উদ্দিন রনী, এই আয়োজন পোষা প্রাণীসহ রাস্তার অবহেলিত প্রাণীদের জন্য বিনা কারনে তাদের নির্যাতন না করে তাদের প্রতি সদয় থাকা, রাস্তার কুকুরদের না মেরে ভ্যাকসিনের আওতায় আনার দাবী জানান তিনি। এছাড়া দুর্ঘটনায় আক্রান্ত হওয়া অসহায় প্রাণীদের উদ্ধার কাজের জন্য একটা টিম গঠনে বিত্তবানরদের এগিয়ে আসার আহবান জানান।
মন্তব্য করুন


মন্তব্য করুন


কুমিল্লায়
পৃথক দুইটি অভিযানে কোতয়ালী মডেল থানা এলাকা হতে জাবেদ মিয়া হত্যা মামলার যাবজ্জীবন
সাজাপ্রাপ্ত দুইজন আসামী গ্রেফতার করেছে র্যাব-১১, সিপিসি-২।
১৯ সেপ্টেম্বর রাতে
র্যাব-১১, সিপিসি-২ একটি বিশেষ আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কুমিল্লা জেলার
কোতয়ালী মডেল থানাধীন ফৌজদারী মোড় ও বাটপাড়া চৌমুহনী এলাকায় পৃথক অভিযান পরিচালনা করে
জাবেদ মিয়া হত্যা মামলার দুইজন যাবজ্জীবন যাজাপ্রাপ্ত আসামী ১। মোঃ আল আমিন এবং ২। রতন দত্ত কে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃত আসামী
১। মোঃ আল আমিন (৪১) কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি থানার লক্ষীপুর গ্রামের মোঃ সেলিম মিয়া
এর ছেলে এবং ২। রতন দত্ত (৩৮) একই জেলার কোতয়ালী মডেল থানার কালিয়াজুরি গ্রামের হরিপদ
দত্ত এর ছেলে।
র্যাব জানান, আসামীদ্বয়কে জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায় যে, গত ২৭/০১/২০১২ ইং তারিখে গ্রেফতারকৃত আসামীদ্বয় ও তার অন্যান্য সহযোগীরা মিলে চাঁদা দাবীর বিষয়ে তর্কবিতর্কের এক পর্যায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপাইয়া ভিকটিম মোঃ জাবেদ মিয়া (২৫) কে হত্যা করে। উক্ত ঘটনায় নিহতের পিতা বাদী হয়ে কুমিল্লা জেলার কোতয়ালী মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। উক্ত মামলার বিচারকার্য শেষে বিজ্ঞ আদালত গত ১৮/০৭/২০২৪ ইং তারিখে পেনাল কোড ৩০২/৩৪ ধারায় বর্ণিত আসামীদ্বয়ের বিরুদ্ধে যাবজ্জীবন এবং ২০ হাজার টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ডের রায় প্রদান করেন। এরই প্রেক্ষিতে অভিযান পরিচালনা করে আসামীদ্বয়কে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামীদ্বয়ের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কুমিল্লা জেলার কোতয়ালী মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন


নেকবর হোসেন, কুমিল্লা প্রতিনিধি:
ডাকসুর সাবেক ভিপি ও গণ অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব নুরুল হক নুর এবং কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীদের ওপর ন্যক্কারজনক হামলার প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে গণ অধিকার পরিষদ, কুমিল্লা জেলা শাখা।
শনিবার (৩০ আগস্ট) দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে কুমিল্লা কোটবাড়ি বিশ্বরোড এলাকায় এ অবরোধ কর্মসূচি শুরু হয়। কর্মসূচিতে দলীয় নেতাকর্মীরা নুরুল হক নুরের ওপর হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
অবরোধ চলাকালে বক্তারা বলেন, দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলন দমাতে সরকার বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর একের পর এক হামলা চালানো হচ্ছে। তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, নুরুল হক নুরসহ গণ অধিকার পরিষদের কোনো নেতাকর্মীর ওপর আবারো হামলা হলে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।
আন্দোলন কারিরা টায়ার জালিয়ে বিক্ষাভ করে।
এ সময় সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে এবং এলাকাজুড়ে উত্তেজনা বিরাজ করে।
পুলিশের হস্তক্ষেপে আধাঘন্টা পর আন্দোলনকারীরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক থেকে অবরোধ তুলে নেন।তুলে নেয়ার আগে ২৪ ঘন্টার মধ্যে দোষীদের শাস্তির ব্যবস্হা না করলে আবারও রাজপথ অচল করে দেয়া হবে। যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
মন্তব্য করুন


কুমিল্লায় ৩০ কেজি গাঁজাসহ দুইজন মাদক
ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে কোতয়ালী মডেল থানার পুলিশ।
গতকাল (৮ মে) বিকালে কোতয়ালী মডেল থানার এসআই শেখ মফিজুর রহমান
ও সঙ্গীয় ফোর্স বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে কোতয়ালী মডেল থানাধীন পাঁচথুবী ইউনিয়নের
পাঁচথুবী পশ্চিমপাড়া রমিজ মিয়ার বাড়ির সামনে পাকা রাস্তার উপরে ৩০ কেজি গাঁজাসহ মাদক
ব্যবসায়ী রাসেল ও জামাল কে গ্রেফতার করেন।
গ্রেফতারকৃত আসামীরা হলো: কুমিল্লা
জেলার ইটাল্লা (পূর্ব পাড়া) এলাকার মৃত শাহ আলম এর ছেলে রাসেল(২২) এবং একই এলাকার আব্দুর
রহমান এর ছেলে জামাল(৪০)।
উক্ত ঘটনায় কোতয়ালী মডেল থানায় মামলা
দায়ের করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন


কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে এক হাজতীর জন্য জুতার ভেতরে বিশেষভাবে লুকানো গাঁজা সরবরাহের চেষ্টা চালানোর সময় ধরা পড়েছেন এক দর্শনার্থী। অভিযুক্ত ওই ব্যক্তি বর্তমানে কারা হেফাজতে রয়েছেন।
আজ মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেন কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার হালিমা খাতুন।
কারা সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটের দিকে কুমিল্লা নগরীর বাদশা মিয়া বাজার এলাকার জোলমত মিয়ার ছেলে শান্ত কারাগারে আটক হাজতি (বন্দি নং- ৪০০১/২৪) মোতালেব হোসেনের জন্য ১ জোড়া চামড়ার জুতা ও কিছু পোশাক নিয়ে কারা ক্যান্টিনে আসেন। সেগুলো তিনি দায়িত্বরত কারারক্ষী (নং-২২৪১৮) মোঃ মাসুদের কাছে হস্তান্তর করেন। জুতার গঠন দেখে কারারক্ষীর সন্দেহ হলে তিনি সহকর্মী কারারক্ষী (নং-২৩০৫৬) মোঃ সানিকে বিষয়টি দেখান। পরে শান্তকে রিজার্ভ গার্ডে নিয়ে গিয়ে জুতার নিচের সোল খুললে সাদা পলিথিনে মোড়ানো তিনটি গাঁজার প্যাকেট উদ্ধার করা হয়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সিনিয়র জেল সুপার জানান, দর্শনার্থী শান্তকে আটক করে রিজার্ভ গার্ডে রাখা হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
মন্তব্য করুন


কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের নগর ভিত্তিক পানিচক্রের টেকসই রূপান্তর নিয়ে পরিকল্পনা কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
সোমবার কুমিল্লার হোটেল এলিট প্যালেসের লোটাস হলে উক্ত পরিকল্পনা কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডাক্তার তাহসিন বাহার।
কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ শামসুল আলমের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রজেক্ট ম্যানেজার পেট্রেসিয়া সোলরঝানো।
বাংলাদেশ নেদারল্যান্ড দূতাবাসের অর্থায়নে নগরভিত্তিক পানিচক্রের টেকসই রূপান্তর
প্রকল্প নিয়ে দুই দিনব্যাপী এই পরিকল্পনা কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
মন্তব্য করুন


মজিবুর
রহমান পাবেল:
দীর্ঘ
পাঁচ বছর পর আবারও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) অনুষ্ঠিত হলো বাংলা নববর্ষের বর্ণাঢ্য
আয়োজন। সোমবার (১৪ এপ্রিল) দিনব্যাপী ‘বাংলা নববর্ষ ১৪৩২’ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়
ক্যাম্পাস ছিল উৎসবমুখর, প্রাণবন্ত। শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের স্বতঃস্ফূর্ত
অংশগ্রহণে রঙিন হয়ে ওঠে পুরো ক্যাম্পাস।
উৎসবের সূচনা হয় সকাল সাড়ে ৯টায়, ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোঃ হায়দার আলীর নেতৃত্বে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মাধ্যমে। শোভাযাত্রাটি প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে শুরু হয়ে বৈশাখী চত্বরে গিয়ে শেষ হয়, যেখানে বর্ষবরণ মেলা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মাসুদা কামাল, ট্রেজারার প্রফেসর ড. মোহাম্মদ সোলায়মান, প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোঃ আবদুল হাকিম, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেনসহ অন্যান্য শিক্ষক, কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীবৃন্দ।
সকাল
১০টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয় মাঠে শুরু হয় বিভিন্ন খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক আয়োজন। ছেলেদের
জন্য আয়োজন করা হয় মোরগ লড়াই আর মেয়েদের জন্য ছিল মিউজিক্যাল চেয়ার প্রতিযোগিতা, যা
শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ ও আনন্দ ছড়িয়ে দেয়।
সকাল
সাড়ে ১০টা থেকে শুরু হয় সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। শিক্ষার্থীরা পরিবেশন করেন লোকগান, নৃত্য,
কবিতা আবৃত্তি ও নাটিকা। এছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি বিভাগ বাংলা নববর্ষকে ঘিরে
নিজ নিজ স্টলে পরিবেশন করে ঐতিহ্যবাহী পিঠাপুলি — পাটিসাপটা, চিতই, দুধচিটা, মালপোয়া
প্রভৃতি।
ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোঃ হায়দার আলী বলেন, “বাংলা নববর্ষ এদেশের সব ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষের মিলনমেলা। এটি আমাদের জাতীয় সংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই আয়োজন নতুন প্রজন্মের মধ্যে দেশপ্রেম ও সংস্কৃতি চেতনা জাগ্রত করবে।”
প্রো-ভাইস
চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মাসুদা কামাল বলেন, “বাঙালির ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে ধরে রাখার
দায়িত্ব আমাদের সকলের। এমন আয়োজন সেই দায়িত্ব পালনকে আরও বেগবান করে।”
ট্রেজারার
প্রফেসর ড. মোহাম্মদ সোলায়মান বলেন, নতুন বছর আমাদের সামনে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে
দিয়েছে। অতীতের অন্যায়-অবিচার থেকে শিক্ষা নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে হবে স্বচ্ছতা ও গণতন্ত্রের
পথে।
প্রায়
পাঁচ বছর পর কুবিতে এই আয়োজন হওয়ায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা
গেছে। দিনভর চলা নানা আয়োজনে মুখর ছিল গোটা ক্যাম্পাস।
মন্তব্য করুন


মজিবুর রহমান পাবেল,কুমিল্লা:
১৯৭১ সালের ১৮ অক্টোবর কুমিল্লা জেলার ব্রাহ্মণপাড়া থানায় দেউশ মন্দভাগ বাজারে মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানী বাহিনীর বিরুদ্ধে একটি যুদ্ধে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করে।
১৯৭১ সালের ১৪ অক্টোবর সালদা নদীতে প্রথম আক্রমণের পর ৪ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ‘সি’ কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার ওহাবের ৭ নং প্লাটুনকে দেউশ-মন্দভাগ এলাকায় প্রতিরক্ষা অবস্থান নিতে নির্দেশ দেন। এলাকাটি দক্ষিণ-পশ্চিমে চান্দলা খাল ও দক্ষিণ-পূর্বে সালদা নদী ঘিরে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। সুবেদার ওহাবের নেতৃত্বে প্রায় ৬০ জন মুক্তিযোদ্ধা, ২টি এমজি, ৭-৮টি এলএমজি এবং ৬০ মি.মি. মর্টারসহ দৃঢ় প্রতিরক্ষা অবস্থান গ্রহণ করেন।
শত্রুপক্ষ ৩৩ বালুচ রেজিমেন্টের একটি কোম্পানি ১৭ অক্টোবর রাতে সালদা নদী পথে অগ্রসর হয়। ১৮ অক্টোবর ভোরে চান্দলা খালে মাছ ধরায় নিয়োজিত আবু মিঞা প্রথমে শত্রুর নৌবহরের শব্দ শুনে মুক্তিযোদ্ধাদের সতর্ক করেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই শত্রুর প্রথম নৌকাটি প্রতিরক্ষা অঞ্চলে প্রবেশ করলে নায়েক আতাউর রহমান গুলি চালিয়ে আক্রমণ শুরু করেন। মুহূর্তেই মুক্তিবাহিনীর সব পোস্ট সক্রিয় হয় এবং সুবেদার ওহাব নিজে এমজি পজিশনে থেকে ফায়ার নিয়ন্ত্রণ করেন। ভয়াবহ গুলিবর্ষণে পাকিস্তানি সেনাদের ৭-৮টি নৌকা ধ্বংস হয়, বহু সেনা নিহত ও আহত হয়। ভোরের আলো ফোটার পর সুবেদার ওহাব ও তাঁর সহযোদ্ধারা লে. সীমাসহ প্রায় ১৫-২০টি মৃতদেহ উদ্ধার করেন। নিহত এক হাবিলদারের পকেট থেকে উদ্ধারকৃত চিঠিতে লেখা ছিল- “এখানে মুক্তিবাহিনী নামক বাহিনী আচমকা এসে আক্রমণ করে পালিয়ে যায়, এদের দেখা যায় না।”
এই চিঠি মুক্তিবাহিনীর গেরিলা কৌশলের সার্থকতা প্রকাশ করে।
আহতদের মধ্যে হাবিলদার আকরাম নামের এক সৈনিক জানায়, তাদের নৌকায় মেজর আফ্রিদি ছিলেন যিনি গুলিবিদ্ধ হয়ে নিখোঁজ হন। সুবেদার ওহাব আহত আকরামকে হত্যা না করে চিকিৎসার জন্য ক্যাম্পে পাঠান—যা মুক্তিবাহিনীর মানবিক আচরণের উদাহরণ।
অতঃপর সকাল ৯টার দিকে পাকিস্তানি বাহিনী পশ্চিম ও দক্ষিণ দিক থেকে প্রতিআক্রমণ শুরু করে। সুবেদার ওহাবের এমজি ও এলএমজি পোস্ট থেকে গুলি ও মর্টার বর্ষণে শত্রু ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়ে পিছু হটে যায়। এরপর শুরু হয় আধাঘণ্টারও বেশি সময় ধরে আর্টিলারি গোলাবর্ষণ, যা অধিকাংশই খাল ও বিলের পানিতে গিয়ে পড়ে। মুক্তিযোদ্ধাদের কেউ হতাহত না হলেও তাদের দৃঢ় অবস্থান শত্রুকে হতাশ করে।
দুপুরে শত্রু ৪টি হেলিকপ্টার নিয়ে আকাশ থেকে গুলি বর্ষণ করে। এই হামলায় কয়েকজন বেসামরিক নাগরিক হতাহত হলেও মুক্তিযোদ্ধারা অক্ষত থাকে। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকলেও সুবেদার ওহাব পরে হেডকোয়ার্টারের সঙ্গে যোগাযোগ পুনঃস্থাপন করে যুদ্ধের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন পাঠান।
এই অভিযানে পাকিস্তানি বাহিনীর প্রায় ৫০-৫২ জন নিহত ও ৫০-৫৫ জন আহত হয়, যার মধ্যে ২ জন অফিসারও ছিলেন। এটি ছিল মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে একক অভিযানে শত্রুপক্ষের সর্বাধিক হতাহতের অন্যতম নজির। পাকিস্তানি সেনারা পরবর্তীতে সুবেদার ওহাবকে জীবিত বা মৃত অবস্থায় ধরিয়ে দিলে ৫০,০০০ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করে।
দেউশ-মন্দভাগ অভিযান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে এক উজ্জ্বল অধ্যায়—যেখানে সুবেদার ওহাবের নেতৃত্ব, মুক্তিযোদ্ধাদের কৌশল, সাহস ও আত্মত্যাগ প্রমাণ করেছিল যে আধুনিক অস্ত্র নয়, স্বাধীনতার অদম্য আকাঙ্ক্ষাই বিজয়ের মূল শক্তি।
মন্তব্য করুন