বাংলাদেশ ও ঘানা এই দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও ব্যবসা সম্প্রসারণে সহযোগিতা বাড়াতে সম্মত হয়েছে।
মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সফররত ঘানার পররাষ্ট্র ও আঞ্চলিক সংহতি বিষয়ক মন্ত্রী শার্লি আয়োরকর বোচওয়ে-এর নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলের সৌজন্য সাক্ষাতে এ বিষয়ে একমত হয় বাংলাদেশ ও ঘানা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্পিচ রাইটার মো. নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন, “বাংলাদেশ ও ঘানা কৃষি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, ফার্মাসিউটিক্যালস, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, পাট, চামড়া ও গার্মেন্টস সহ বিভিন্ন খাতে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণের জন্য সহযোগিতা বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন ক্ষেত্র চিহ্নিত করেছে।” গণভবনে আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ঘানার পররাষ্ট্র ও আঞ্চলিক সংহতি মন্ত্রী শার্লি আয়োরকার বোচওয়ের মধ্যে বৈঠকে এ বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আফ্রিকার দেশগুলোর সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়ানোর ওপর জোর দেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “আফ্রিকান দেশগুলির সাথে ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নতির বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। আফ্রিকান দেশগুলো বাংলাদেশ থেকে পাট ও পাটজাত পণ্য এবং টেক্সটাইল পণ্য আমদানি করতে পারে।
ঘানার পররাষ্ট্রমন্ত্রী দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বৃদ্ধির আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, বাংলাদেশ ও ঘানার মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়ানোর যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। এ লক্ষ্যে তিনি দুই দেশের মধ্যে কৃষি, ওষুধ, আইসিটি এবং কৃষিভিত্তিক খাদ্য পণ্যের ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানোর পরামর্শ দেন। তিনি আগামী অক্টোবরে অনুষ্ঠিতব্য কমনওয়েলথের মহাসচিব হিসেবে আসন্ন নির্বাচনে তার দেশের প্রার্থীতার পক্ষে বাংলাদেশের সমর্থন কামনা করেন। এবার আফ্রিকার দেশগুলো থেকে কমনওয়েলথ মহাসচিব নির্বাচিত হবেন।
কমনওয়েলথ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এই সংস্থা এক সময় নিষ্ক্রিয় ছিল। কিন্তু কমনওয়েলথ এখন বিনিয়োগ এবং মানবসম্পদ প্রশিক্ষণ (সদস্য রাষ্ট্রগুলির মধ্যে) বৃদ্ধিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে।” প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলেন, কমনওয়েলথের মহাসচিব পদে যোগ্য নেতৃত্ব প্রয়োজন।
সাক্ষাৎকালে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অ্যাম্বাসেডর অ্যাট লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া।
মন্তব্য করুন
বিশ্বের শ্রমজীবী-কর্মজীবী
মেহনতি মানুষের ঐক্য, সংহতি, সংগ্রাম ও বিজয়ের দিন মহান মে দিবস উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি
মো. সাহাবুদ্দিন বলেছেন, শিল্প ও শ্রমবান্ধব বর্তমান সরকার শ্রমিকের সার্বিক কল্যাণ
সাধন ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছে।
বুধবার মহান মে দিবস ২০২৪
উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে তিনি বলেন,আমি বাংলাদেশসহ
বিশ্বের সব শ্রমজীবী মানুষকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। বিশ্বের অন্যান্য
দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও যথাযথ মর্যাদায় দিবসটি উদযাপনের উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই।
মহান মে দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য ‘শ্রমিক মালিক গড়বো দেশ, স্মার্ট হবে বাংলাদেশ’ যথাযথ
ও সময়োপযোগী হয়েছে বলে আমি মনে করি।
রাষ্ট্রপতি আরো বলেন, ২০৪১
সালের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত উন্নত-সমৃদ্ধ ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে
শ্রমিকের পেশাগত নিরাপত্তা ও সুস্থতা, শ্রমিক-মালিক সুসম্পর্ক, উন্নত কর্মপরিবেশসহ
শ্রমিকের সার্বিক অধিকার নিশ্চিতকরণের কোনো বিকল্প নেই। বিশ্বব্যাপী আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে
শ্রমজীবী মানুষের কঠোর পরিশ্রম, ত্যাগ ও ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাই দেশের উন্নয়ন নিশ্চিত
করতে হলে শ্রমিকের অধিকার ও উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হবে। তিনি আরও বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু
শেখ মুজিবুর রহমান শ্রমজীবী ও মেহনতি মানুষের অধিকার আদায়ে সারাজীবন সংগ্রাম করে গেছেন।
বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার পরেই মে দিবসকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে দিনটিতে সরকারি ছুটি
ঘোষণা করেন। শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিতকল্পে তিনি মজুরি কমিশন গঠন করেন এবং
শ্রমিকদের জন্য নতুন বেতন কাঠামোর ঘোষণা দেন। ১৯৭২ সালে জাতির পিতার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে
বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার সদস্যপদ লাভ করে এবং আইএলও’র ৬টি কোর কনভেনশনসহ
২৯টি কনভেনশন অনুসমর্থন করে। শ্রমজীবী মানুষের জীবনমান উন্নয়ন ও অধিকার রক্ষায় যা ছিল
এক অনন্য মাইলফলক।
বঙ্গবন্ধু রাজনৈতিক স্বাধীনতার
পাশাপাশি জাতির অর্থনৈতিক মুক্তির স্বপ্ন দেখতেন। তার সেই স্বপ্নপূরণের অন্যতম অনুষঙ্গ
শ্রমজীবী মানুষের উন্নয়নে দলমত নির্বিশেষে সবাইকে একযোগে কাজ করা নিয়ে মো. সাহাবুদ্দিন
বলেন, শ্রমিক-মালিক সম্প্রীতি ও যৌথ প্রয়াস
দেশের উন্নয়নকে আরও বেগবান করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
তিনি আরো বলেন, টেকসই শিল্প
ও বাণিজ্য খাত গড়তে বিনিয়োগ-বান্ধব পরিবেশ, শ্রমিকের একাগ্রতা এবং শ্রমিক-মালিকের পারস্পরিক
সৌহাদ্যপূর্ণ সম্পর্ক নিশ্চিত করতে হবে। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার, স্বার্থ ও কল্যাণের
সঙ্গে মহান মে দিবসের অন্তর্নিহিত তাৎপর্য ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাদের জীবনমান উন্নয়ন
এবং ন্যায্য অধিকার রক্ষায় সকলে স্ব স্ব ক্ষেত্রে সকলে ঐকান্তিকভাবে দায়িত্ব পালন করবেন
এ প্রত্যাশা করি।
রাষ্ট্রপতি মহান মে দিবস
২০২৪ উদযাপন উপলক্ষে গৃহীত সব কর্মসূচির সফলতা কামনা করেন।
মন্তব্য করুন
নিজেদের সংখ্যালঘু হিসেবে নয়, বরং মানুষ
হিসেবে এবং বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে বিবেচনা করে সাংবিধানিক অধিকার চাওয়ার আহ্বান
জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। একই সঙ্গে হিন্দু
সম্প্রদায়ের ওপর বিভিন্ন হামলার ঘটনায় দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার
প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।
মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) রাজধানীর ঢাকেশ্বরী
মন্দিরে সনাতন ধর্মালম্বীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস
এ আহ্বান জানান।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস
বলেন, এমন বাংলাদেশ আমরা করতে যাচ্ছি, যেখানে সবাই এক পরিবার। এটা হলো মূল জিনিস। এখানে
পরিবারের মধ্যে কোনো পার্থক্য করা, বিভেদ করা, এটার কোনো প্রশ্নই আসে না। আমরা মুসলমান,
হিন্দু, বৌদ্ধ হিসেবে বিবেচিত নই; মানুষ হিসেবে বিবেচিত। আমাদের অধিকারগুলো নিশ্চিত
হোক। আপনারা যদি টেনে টেনে নিয়ে আসেন আমি ওমুক, আমি তমুক, এটা আবার পুরোনো জায়গায় চলে
গেলো। আপনারা বলেন যে আমি মানুষ, আমি বাংলাদেশের মানুষ, আমার সাংবিধানিক অধিকার এই,
আমাকে দিতে হবে। সব সরকারের কাছে এটাই চাইবেন। সব সমস্যার গোড়া হলো আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলো
পচে গেছে। এ কারণেই এসব গোলমাল হচ্ছে। আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলোকে ঠিক করতে হবে। ন্যায়বিচার
হলে কে বিচার পাবে না আমাকে বলেন। কোন ধর্মের, কোন জাতের, আইনে কি বলা আছে যে মুসলমান
সম্প্রদায় হলে এই আদালতে হবে, হিন্দু হলে ওই আদালতে যাবে। সবার জন্য আইন একটা, কার
সাধ্য আছে সেখানে বিভেদ করে যে এ রকম একটা, ওই রকম একটা। এটা এমন রোগ, মূলে যেতে হবে।
আপনারা যদি বলেন আমাদের সংখ্যালঘুরা, এটা বললে মূল সমস্যা থেকে আমরা দূরে সরে যাচ্ছি।
আমাদের বলতে হবে আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সেটা পেলে বাকস্বাধীনতা
প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আমাদের মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটিই হলো আমাদের মূল লক্ষ্য।
সনির্বন্ধ অনুরোধ আপনারা বিভিন্ন খোপের (বিভেদ) মধ্যে চলে যাইয়েন না। এই খোপ হলে, খোপের
মধ্যে মারামারি-কাটাকাটি লেগে যাবে। এক হয়ে আসেন। এক আইন, আমাদের আইনি অধিকার দিতে
হবে। বলেন, আপনারা আইনি অধিকার পান না, বিচার হয় না। এটাই হলো আসল জিনিস। বিচারব্যবস্থা
আমাদের দিকে তাকায় না, পুলিশ আমাদের দিকে তাকায় না। কারণ, আমি অধিকারটা … করতে পারি
নাই। আমাদের নীতিটা আমরা প্রতিষ্ঠা করতে পারি নাই। খোপ খোপ করতে আরম্ভ করবেন, তারাও
মজা পেয়ে যাবে। ওই মজার খেলাতে আমাদের আর নিয়ে যাইয়েন না। আমরা এসেছি, আমরা এক মানুষ,
আমাদের এক অধিকার। এর মধ্যে কোনো পার্থক্য করা যাবে না। একটু সহযোগিতা করেন আমাদের,
একটু ধৈর্য্য ধরেন। কী করতে পারলাম, কী পারলাম না সেটা পরে বিচার কইরেন। যদি না পারি
আমাদের দোষ দেবেন।
এর আগে সনাতন ধর্মের ধর্মীয় নেতারা
বিভিন্ন সময় তাদের ওপর হামলার কথা তুলে ধরেন এবং অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধানের কাছে এসব
সমস্যার স্থায়ী প্রতিকার চান। ড. মুহাম্মদ ইউনূস অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করে ন্যায়
প্রতিষ্ঠা করা হবে বলে তাদের আশ্বাস দেন।
মন্তব্য করুন
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস 'ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা সরকার সবকিছু ধ্বংস করে গেছে' - উল্লেখ করে বলেছেন, নির্বাচনের আগে আমাদের অর্থনীতি, শাসনব্যবস্থা, আমলাতন্ত্র ও বিচারব্যবস্থায় সর্বাত্মক সংস্কার করতে হবে।
একটি গণমাধ্যমকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস।
সোমবার (২ ডিসেম্বর) প্রকাশিত হয় সাক্ষাৎকারটি।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচনী ব্যবস্থা, সংবিধান এবং বিচার ব্যবস্থার ক্ষেত্রে সংস্কারের জন্য বেশ কয়েকটি কমিশন গঠন করেছে। জানুয়ারির মধ্যে ওই কমিশনগুলোর সুপারিশ হাতে পাওয়ার পর পূর্ণাঙ্গ সংস্কার বাস্তবায়ন করার কথা জানান অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। উপদেষ্টা বলেন, 'এই সংস্কার বাস্তবায়নে সময় লাগবে, কেননা ‘নতুন বাংলাদেশ’গড়তে আমরা একদম শূন্য থেকে শুরু করেছি। '
নির্বাচন ঠিক কখন হবে সে বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস। প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বলেছেন, ‘নির্বাচনের সময় নির্ভর করছে সংস্কার প্রক্রিয়ার ওপর। এর ফলাফলই সময় নির্ধারণ করে দেবে। ’
সাধারণ নির্বাচনে ড. ইউনূস প্রার্থী হবেন কি না জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি নাকচ করে দিয়ে বলেন, ‘না, আমি রাজনীতিবিদ নই। আমি সব সময়ই রাজনীতি থেকে দূরে থেকেছি।’ রাষ্ট্রের যেসব ব্যক্তি নীতি-নৈতিকতা সমুন্নত রাখেন, নিয়মকানুন মেনে চলেন এবং নিজেকে দুর্নীতিমুক্ত রাখেন তাদের নির্বাচনে দাঁড়ানো উচিত বলে মনে করেন ড. ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বলেন, ‘হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে দেশের শাসনকাঠামো পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে, আর গণতন্ত্র, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধার করে তা পুনর্গঠনের সুবিশাল কর্মযজ্ঞ আমাদের ঘাড়ে এসে পড়েছে।'
প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বলেন, ‘হাসিনার শাসনামলে গণতন্ত্রের রীতিনীতি একদম ধ্বংস হয়ে গেছে। টানা তিন মেয়াদে ভোটারবিহীন ভুয়া নির্বাচন মঞ্চস্থ করেছেন হাসিনা। আর তাতে তিনি নিজেকে এবং তার দলকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী ঘোষণা করেছেন। একজন ফ্যাসিবাদী শাসক হিসেবে এসব করেছেন হাসিনা।'
প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বলেন, 'এ বছরের আগস্টে ছাত্র নেতৃত্বাধীন সরকারি চাকরিতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে কয়েকশ শিক্ষার্থী নিহত হন। এরপরই শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন হাসিনার পতনের আন্দোলনে রূপ নেয়। শেষ পর্যন্ত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে হাসিনার ১৫ বছরের শাসনের অবসান ঘটে। তিনি হেলিকপ্টারে চড়ে ভারতে পালিয়ে যান। অক্টোবরে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনা এবং তার বেশ কয়েকজন সহযোগীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। ’
বিচারিক কার্যক্রম শেষে রায় হলে হাসিনার প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে ভারতকে অবহিত করা হবে বলে জানান ড. ইউনূস। তিনি বলেন, ‘বিচার শেষে তার বিরুদ্ধে চূড়ান্ত রায় এলে আমরা ভারতের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে হাসিনাকে হস্তান্তরের অনুরোধ জানাব। এক্ষেত্রে উভয় দেশের স্বাক্ষরিত একটি আন্তর্জাতিক আইনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভারত এ আইন মানে কাজ করতে বাধ্য হবে।’
কূটনীতিক ফ্রন্টে বাংলাদেশের ভারতের সঙ্গে শক্তিশালী ও সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলা উচিত। এক্ষেত্রে ড. ইউনূস দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা সার্ককে পুনরুজ্জীবিত করার প্রস্তাব করেছেন। ভারত ও পাকিস্তানের বৈরী সম্পর্কের ফলে সার্ক কার্যত নিষ্ক্রিয় রয়েছে। সার্কের লক্ষ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে- ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের সদস্য দেশগুলোর মতো নিজেদের মধ্যে চলাফেরার স্বাধীনতা, আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্য উৎসাহিত করা। সার্কের সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে ভারতকে পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনা নিরসনের আহ্বান জানান ড. ইউনূস।
এদিকে হাসিনার পতনের পর বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে ভারত। তাদের দাবি বাংলাদেশে হিন্দুদের ঘরবাড়ি, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও মন্দিরে ‘হামলা’ করা হয়েছে। এ বিষয়ে ঢাকাকে অবশ্যই হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে বলে জোর দিয়েছে দিল্লি। তবে ভারত সরকারের এসব ঢালাও বক্তব্য নাকচ করে দেন ড. ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বলেন, ‘সংখ্যালঘু ইস্যুতে যা বলা হচ্ছে তার বেশির ভাগই প্রোপাগান্ডা। ’ এগুলো সঠিক তথ্যের ওপর ভিত্তি করে বলা হচ্ছে না বলে পাল্টা অভিযোগ করেন ড. ইউনূস। তিনি ভারতীয় সাংবাদিকদের বাংলাদেশে এসে তদন্তসাপেক্ষে সঠিক তথ্য তুলে ধরার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আমরা এসব অপ-তথ্যের বিরুদ্ধে ভারত সরকারকে ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য কাজ করছি।
অন্য আঞ্চলিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে ইউনূস চীনকে 'আমাদের বন্ধু' বলে অভিহিত করেন।
তিনি বলেন, সড়ক ও বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ থেকে শুরু করে সমুদ্রবন্দর পর্যন্ত তারা আমাদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করছে। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ বেইজিংয়ের সঙ্গে সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোর সংস্থা- আসিয়ানে বাংলাদেশের যোগ দেওয়ার বিষয়ে জোর দেন ড. ইউনূস। বাংলাদেশ আসিয়ানে যোগ দেয়াকে একটি প্রতিশ্রুতিশীল সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করতে চায়। কারণ বাংলাদেশ বিশেষ করে ২০২৬ সালে জাতিসংঘের স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছে, এরপর বাংলাদেশ আর অগ্রাধিকারভিত্তিক শুল্ক সুবিধা পাবে না।
মালয়েশিয়া আগামী জানুয়ারি থেকে আসিয়ানের সভাপতি হতে যাচ্ছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে ড. ইউনূস বলেন, তিনি মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে বাংলাদেশের সদস্যপদ নিয়ে আলোচনা করেছেন। তিনি বাংলাদেশকে আসিয়ানে স্বাগত জানাতে তার সদিচ্ছার কথা ব্যক্ত করেছেন। তবে এক্ষেত্রে বেশ কিছু ধাপ রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বলেন, বাংলাদেশের আসিয়ানে যোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রথম ধাপটি হবে আসিয়ানের সংজ্ঞা সংশোধনে একটি সর্বসম্মত রেজোল্যুশন নিশ্চিত করা। এর আগে আমরা আসিয়ানের একটি সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার হিসেবে স্বীকৃতি অর্জনের আশা করছি। আসিয়ানের সদস্য দেশগুলো বাংলাদেশের এই প্রচেষ্টাকে সমর্থন করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন ড. ইউনূস।
মিয়ানমারের সামরিক জান্তার দমন-পীড়ন থেকে বাঁচতে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া বিপুল সংখ্যক রাষ্ট্রবিহীন ও নাগরিকত্বের প্রাধিকার-বঞ্চিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী প্রসঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বলেন, 'এই দায় (রোহিঙ্গা) বাংলাদেশ কতদিন বহন করবে? রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে আমাদের একটি সুস্পষ্ট গন্তব্য ও একটি অভিন্ন লক্ষ্য ঠিক করা দরকার। '
বাংলাদেশ মিয়ানমারে জাতিসংঘ-শাসিত একটি নিরাপদ অঞ্চল প্রতিষ্ঠার পক্ষে প্রচার চালাচ্ছে।
প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বলেন, এতে করে এই বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা তাদের দেশেই আশ্রয়-শিবিরে থাকতে পারবে। সেখানকার পরিস্থিতি স্থিতিশীল হলে তাদের অন্য কোনো দেশে স্থানান্তর করার প্রয়োজন হবে না, তারা তাদের নিজেদের বাড়িঘরে ফিরে যেতে পারবে বলে উল্লেখ করেন মুহাম্মদ ইউনূস।
মন্তব্য করুন
অন্তর্বর্তীকালীন
সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে যুক্ত হচ্ছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক সি আর আবরার
(চৌধুরী রফিকুল আবরার)।
তিনি
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাচ্ছেন ।
মঙ্গলবার
(৪ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান প্রধান
উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
অধ্যাপক
সিআর আবরার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক নামকরা শিক্ষক ছিলেন উল্লেখ করে শফিকুল আলম বলেন,
কাল (বুধবার) উনি শপথ নেবেন। প্রফেসর ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ অনেক দিন ধরেই বলছিলেন, উনি
একসঙ্গে দুটি মন্ত্রণালয় কাজ করতে পারছেন না। যেহেতু উনি অ্যাডভান্সড স্টেজে, প্ল্যানিং
মিনিস্ট্রিতে অনেক বড় দায়িত্ব ওনার। এজন্য অধ্যাপক সি আর আবরার যুক্ত হচ্ছে উপদেষ্টা
পরিষদে।
প্রসঙ্গত,
বর্তমান শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ এই মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি পরিকল্পনা
মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বও পালন করে আসছেন।
তবে
নতুন কতজন উপদেষ্টা শপথ নেবেন সেটি তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
শফিকুল আলম বলেন, উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন
মাহমুদ অনেকদিন যাবত বলে আসছিলেন, তার পক্ষে একই সঙ্গে পরিকল্পনা ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের
দায়িত্ব পালন করা সম্ভব হচ্ছে না। এ কারণে তার বদলে অধ্যাপক আবরারকে সম্ভবত শিক্ষা
মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে।
মন্তব্য করুন
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনিযুক্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের আজ মঙ্গলবার বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন ।
এসময় রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যুগোপযোগী কারিকুলাম প্রণয়নের উপর জোর তাগিদ দিয়েছেন। পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা যাতে দেশের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, সংস্কৃতি ও ইতিহাস-ঐতিহ্যসহ সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করতে পারে সে লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়ার কথাও বলেন রাষ্ট্রপ্রধান।
বৈঠক শেষে রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে এসব কথা জানিয়েছেন ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কারিকুলাম যুগোপযোগী করার উপর তাগিদ দিয়ে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন বলেন, উচ্চশিক্ষা বিজ্ঞান ও তথ্য-প্রযুক্তির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া খুবই জরুরি। এসময় তিনি উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আনুষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রম প্রসারে কর্তৃপক্ষ দ্বারা প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা নিয়েও তাঁর আশাবাদ পোষণ করেন ।
সাক্ষাৎকালে উপাচার্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিকসহ সার্বিক কার্যক্রম সম্পর্কে রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করেন। আজকের এই বৈঠক নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, শিক্ষার্থীরা যাতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিজেদের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে পারে সে লক্ষ্যে যুগোপযোগী কারিকুলাম প্রণয়ন করতে হবে।
আজকের এ সৌজন্য সাক্ষাৎ এর সময় রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব মো. ওয়াহিদুল ইসলাম খান, সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এসএম সালাহউদ্দিন ইসলাম ও রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন
অন্তর্বর্তী সরকারের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সঙ্গে জাতিসংঘ শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা (ইউনেসকো), জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি), জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএফপিএ), ইউএন এইডস এবং ইউএন ভলান্টিয়ার এর বিশেষ প্রতিনিধিদল সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছে।
বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সৌজন্য সাক্ষাৎ ও বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
সাক্ষাৎকালে জাতিসংঘ প্রতিনিধিদল অন্তর্বর্তীকালীন বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সহযোগিতার আশ্বাস দেন। বৈঠকে যুব সমাজের উন্নয়নে তৃণমূল পর্যায়ে কার্যক্রমকে ত্বরান্বিত করার বিষয়ে আলোচনা হয়।
জাতিসংঘের প্রতিনিধিদলে আরও ছিলেন ইউএন এইডস’এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. সাইমা খান, ইউএনডিপির উপ-আবাসিক প্রতিনিধি মিজ সোনালী, ইউএনএফপিএ-এর কিশোর কিশোরী ইউনিটের প্রধান ড. ইলিজা আজেই এবং ইউএন ভলেন্টিয়ারের কান্ট্রি কো-অর্ডিনেটর মিজ সোনিয়া মেহজাবিন।
এ সময় ইউনেস্কোর বাংলাদেশ প্রতিনিধি ড. শুসান ভেইজ বলেন, আমরা অন্তর্বর্তী সরকারকে যেকোনো ধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। যুবসমাজের জীবনমান উন্নয়নে আমরা বাংলাদেশে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছি এবং আগামীতে কাজ করার আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদেরকে একটি কমন প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে হবে, যেখানে যুবরা তাদের কথা নির্ভয়ে বলতে পারে।
শুসান ভেইজ বলেন, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে নিয়ে সমন্বয় করে এই কমন প্ল্যাটফর্মের ডিজাইন শুরু করা যেতে পারে।
এ সময় যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে দেশের ছাত্র-জনতা স্বৈরাচার ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে তাদের কণ্ঠস্বর প্রকাশ করেছে। এই প্রেক্ষিতে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জনগণের সকল দাবি আদায় নিয়ে সচেষ্ট রয়েছে। দেশের যুব সংগঠনগুলো সম্প্রতি বন্যা পরিস্থিতিতে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে।
উপদেষ্টা আরও বলেন, যুব অধিদপ্তরের মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ে বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। আমরা এই প্রশিক্ষণগুলো আরও উন্নতিকরণের চিন্তা করছি। এই বিষয়ে আপনাদের সহযোগিতা কামনা করছি।
এ সময় যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মহিউদ্দীন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন
আজ শনিবার বিকালে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বিভিন্ন ইসলামি দলের প্রতিনিধির সঙ্গে আলাপের সময় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, জাতীয় নির্বাচন আয়োজনে অযৌক্তিক সময় নষ্ট করবে না অন্তর্বর্তী সরকার।
বৈঠক শেষে দলগুলোর প্রতিনিধিরা সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।
এ ছাড়া সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে আসন্ন দুর্গাপূজায় কেউ যাতে নৈরাজ্য করতে না পারে সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে ইসলামি দলগুলোর প্রতিও আহ্বান জানান প্রধান উপদেষ্টা।
এর আগে, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেন খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামী, খেলাফত আন্দোলন, ইসলামী আন্দোলন এবং নেজামে ইসলাম বাংলাদেশের শীর্ষ নেতারা।
নেতারা জানান, প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে দ্রুত সময়ে নির্বাচনী পরিবেশ তৈরির জন্য প্রধান উপদেষ্টার কাছে দাবি জানানো হয়। তারা আরও জানান, সংলাপে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতায় ভারসাম্য নিশ্চিত করা, দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী না হওয়া, নির্বাচনী ব্যবস্থাসহ সাংবিধানিক বেশ কিছু সংস্কারের দাবিও উপস্থাপন করেছেন নেতারা।
এ সময় প্রধান উপদেষ্টা যৌক্তিক সময়ে সব কিছুর সমাধান করে দেশকে নির্বাচনের দিকে নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের তিন দিন পর গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব বুঝে নেয় মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন উপদেষ্টা পরিষদ। পরে ১২ আগস্ট মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে বিএনপি, ডা. শফিকুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, শাহ আলমের নেতৃত্বে সিপিবি, মাহমুদুর রহমান মান্নার নেতৃত্বে গণতন্ত্র মঞ্চ, আন্দালিব রহমান পার্থের নেতৃত্বে বিজেপি, এএফএম সোলায়মান চৌধুরীর নেতৃত্বে এবি পার্টি, নুরুল হক নূরের নেতৃত্বে গণঅধিকার পরিষদ, হারুন চৌধুরীর নেতৃত্বে গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য, ববি হাজ্জাজের নেতৃত্বে এনডিএম আলাদা আলাদাভাবে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
এরপর ২৯ আগস্ট মির্জা ফখরুলের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে। সাক্ষাৎ শেষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের জানান, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে পর্যায়ক্রমে প্রধান উপদেষ্টা মতবিনিময় করবেন।
মন্তব্য করুন
শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে চায় দক্ষিণ কোরিয়া।
দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের এক বিবৃতিতেতে এ কথা জানিয়ে আরো বলা হয়েছে যে, অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশে দ্রুত শান্তি ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনবে বলে আশাবাদী দক্ষিণ কোরিয়া। কোরিয়া-বাংলাদেশ সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যেতে অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করার জন্য উন্মুখ দক্ষিণ কোরিয়া।
প্রসঙ্গত, গত ৫ আগস্ট ছাত্র আন্দোলনের মুখে সরকারের পতনের গত ৮ আগস্ট নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হয়।
মন্তব্য করুন
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পূর্ণ অবাধ ও সুষ্ঠু হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
শনিবার (৪ জানুয়ারি) বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় যুক্তরাজ্যের এমপি রূপা হক সাক্ষাৎ করতে এলে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এই প্রতিশ্রুতি দেন।
এ সময় রূপা হকের এক প্রশ্নের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনের জন্য দুটি সম্ভাব্য সময়সূচি রয়েছে। ডিসেম্বর ২০২৫ বা ২০২৬ সালের মাঝামাঝি। তবে নির্বাচনের তারিখ নির্ভর করছে মানুষ কতটা সংস্কার চায় তার ওপর।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘গত তিন নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারেনি। সেখানে ছিল একটি ভুয়া সংসদ, ভুয়া এমপি এবং ভুয়া স্পিকার।’
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘গোটা দেশ এখন তাদের কণ্ঠস্বর ফিরে পেয়েছে, তাদের কণ্ঠ জোরপূর্বক কেড়ে নেওয়া হয়েছিল।’
যুক্তরাজ্যের এমপি রূপা হক আগামী সাধারণ নির্বাচনের অস্থায়ী তারিখ, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কার উদ্যোগ এবং রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণ প্রক্রিয়া সম্পর্কে খোঁজখবর নেন।
যুক্তরাজ্যের এমপি রূপা হক বলেন, ‘বাংলাদেশ দেখে সত্যিই আমি উৎসাহিত।’ আগামী সাধারণ নির্বাচন দেখতে বাংলাদেশে ফিরে আসার ইচ্ছা প্রকাশ করেন তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস রূপা হককে ব্যাখ্যা করেছেন যে জুলাই মাসের গণ-অভ্যুত্থান এবং ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে জনগণের দমন কী কারণে হয়েছিল।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, ব্রিটিশ হাইকমিশন ঢাকার ডেপুটি হাইকমিশনার ও উন্নয়ন পরিচালক জেমস গোল্ডম্যান।
মন্তব্য করুন
মজিবুর
রহমান পাবেল, কুমিল্লা:
কুমিল্লার ৬টি উপজেলায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত গৃহহীন ৭০টি পরিবার নিজ বসতভিটায় বিশেষ আবাসন নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় সেনাবাহিনীর নির্মিত ঘর পেয়েছে।
আজ বুধবার (৩০ এপ্রিল) সকালে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের ঘোলপাশায় ঘর হস্তান্তর অনুষ্ঠানে ভার্চুয়াল মাধ্যমে যুক্ত হয়ে ঘরগুলো উপহার হিসেবে হস্তান্তর করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস।
এসময় কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মোঃ আমিরুল কায়ছার, ৪৪ পদাতিক ব্রিগেডের কমান্ডার ব্রিগ্রেডিয়ার জেনারেল মোঃ এনামুল হক, ২৩ বীরের অধিনায়ক লে. কর্নেল মাহমুদুল হাসান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাশেদুল হক চৌধুরী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ জামাল হোসেনসহ সেনাবাহিনীর উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
জেলার বুড়িচংয়ে ২৯, ব্রাহ্মণপাড়ায় ১০, সদর দক্ষিণে ৬, চৌদ্দগ্রামে ১০, মনোহরগঞ্জে ১০ ও নাঙ্গলকোটে ৫ টি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত উপকারভোগীদের মাঝে হস্তান্তর করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় সেনাবাহিনীর ২৪ ও ৩৩ পদাতিক ডিভিশন এসব গৃহনির্মাণ বাস্তবায়ন করে।
ঢাকায় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সঙ্গে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার গোলপাশা ইউনিয়নের কুমাল্লা গ্রামের উপকারভোগী মো. আলম মিয়ার বাড়ির সামনে থেকে অনুষ্ঠানটি সংযুক্ত হয়।
২০২৪ সালের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত গৃহহীন কুমিল্লা জেলার ৭০টি পরিবারের মধ্যে এ ঘরগুলো হস্তান্তর করা হয়।
মন্তব্য করুন